কনকনে ঠাণ্ডায় জবুথবু লালমনিহাটের জনজীবন

লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় গত ৩ দিন থেকে ঘন কুয়াশায় আর কনকনে ঠাণ্ডায় জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে তিস্তার ধরলাপাড়ের শতাধিক চরের মানুষের অবস্থা একদমই কাহিল। বৃদ্ধ ও শিশুরা শীতজনিত রোগে কাবু হয়ে পড়েছে। সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার ৫টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫৭ জন শিশু ও বৃদ্ধ ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসা নিয়েছেন ৯৩ জন। জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৯ জন। এদিকে, তীব্র ঠাণ্ডায় খেটে খাওয়া মানুষেরা পড়েছে বিপাকে। শীতের কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। মহাসড়কগুলোতে ঘন কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি ) সকাল ১১টায়ও লালমনিরহাটে সূর্যের মুখ দেখা মেলেনি। বেলা যতই বাড়ছে শীতের প্রকোপ ততই বাড়ছে। এদিন, সকালে লালমনিরহাট জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২. ৮ডিগ্রী সেলসিয়াস । বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে লালমনিরহাট। অনেকে খরকুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন। জীবিকার তাগিদে শীতকে উপেক্ষা করেই কাজের সন্ধানে বের হচ্ছেন নিম্নআয়ের মানুষ। তিস্তা পাড়ের ফারুক হোসেন বাবু বলেনকনকনে ঠাণ্ডায় তিস্তা পাড়ের মানুষ খুবই কষ্টে আছে। অন্যান্য এলাকার চেয়ে এই চর এলাকার ঘন কুয়াশা আর ঠাণ্ডা বেশি থাকে। হাতীবান্ধার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের ভ্যানচালক ছলিম উদ্দিন বলেন, এই ঠাণ্ডায় ভাড়া পাওয়া খুবই কষ্টকর। মানুষ ঘর থেকে বেড়াতে চায় না তাই ভাড়াও নেই। পেটের দায়ে ভ্যান নিয়ে বের হতে হচ্ছে। হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফ হোসেন বলেন, নতুন বছরের শুরুতেই অত্র এলাকায় প্রচুর শীত পড়েছে। শীতে কাবু হয়ে পড়ছে নিম্নআয়ের মানুষরা। চর এলাকা মানুষের জন্য সরকারিভাবে শীতবস্ত্রের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করেছি। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শীতার্ত ও ছিন্নমূল মানুষদের শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য পাঁচ উপজেলার নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

0 Comments

Your Comment