ক্ষমা আল্লাহর অন্যতম গুণ

মহান আল্লাহর গুণবাচক অনেক নাম আছে। ওই নামগুলো ‘আসমাউল হুসনা’ হিসেবে পরিচিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআলার ৯৯ নাম আছে। যে ব্যক্তি (সঠিক উপলব্ধির সঙ্গে) এগুলো গণনা (মুখস্থ) করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (বুখারি, হাদিস : ২৭৩৬) আল্লাহর গুণবাচক একটি নাম হলো গফুর বা ক্ষমাশীল। তিনি বান্দার অপরাধের বিচার সঙ্গে সঙ্গে করতে সক্ষম। কিন্তু তিনি বান্দার অপরাধ ক্ষমা করেন, পাপীকে অবকাশ দেন এবং তাওবাকারীর তাওবা কবুল করেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মার্জনাকারী ও ক্ষমাশীল।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৪৩) অন্য আয়াতে এসেছে, ‘তিনিই (আল্লাহ) তাঁর বান্দাদের তাওবা কবুল করেন ও পাপসমূহ মার্জনা করেন। আর তিনি জানেন তোমরা যা করে থাকো।’ (সুরা : শুরা, আয়াত : ২৫) আল্লাহ তাআলা যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন, আবার যাকে ইচ্ছা শাস্তি প্রদান করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর আল্লাহরই জন্য নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের রাজত্ব। তিনি যাকে চান ক্ষমা করেন এবং যাকে চান শাস্তি দেন। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান।’(সুরা : আহজাব, আয়াত : ১৩-১৪) ক্ষমা করা আল্লাহর পূর্ণ ইচ্ছাধীন। মহান আল্লাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আল্লাহর জন্যই সব কিছু, যা আছে আসমানে ও জমিনে। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াময়।’(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১২৯) আল্লাহর অবারিত ক্ষমার দরজা খোলা। তবে শর্ত হলো, আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা যাবে না। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! তুমি যতক্ষণ পর্যন্ত আমাকে ডাকবে এবং আমার কাছে ক্ষমার আশা রাখবে, তোমার অবস্থা যাই হোক না কেন, আমি কারো পরোয়া করি না, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। হে আদম সন্তান! তোমার গুনাহ যদি আকাশ পর্যন্তও পৌঁছে, আর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, আমি কারো পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! তুমি যদি পৃথিবী ভর্তি গুনাহ নিয়ে আমার কাছে হাজির হও এবং আমার সঙ্গে কাউকে শরিক না করা অবস্থায় সাক্ষাৎ করো, আমি পৃথিবীব্যাপী ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে হাজির হবো।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৪০) আল্লাহ তাআলা অসীম ক্ষমাশীল। জুলুমের প্রতিশোধ গ্রহণ ও শাস্তিদানের পূর্ণ ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তিনি কাউকে সহজে শাস্তি দেন না। তিনি বান্দাকে অবকাশ দেন, ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যদি আল্লাহ মানুষকে তাদের সীমা লঙ্ঘনের জন্য পাকড়াও করতেন, তাহলে পৃথিবীতে কোনো প্রাণীকেই তিনি ছাড়তেন না। কিন্তু একটি নির্ধারিত মেয়াদ পর্যন্ত তিনি তাদের অবকাশ দেন।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৬১)

0 Comments

Your Comment