ঝগড়া-বিবাদে জড়িত ব্যক্তি আল্লাহর কাছে ঘৃণিত

মন্দ পদ্ধতিতে বিবাদ ও বিতর্কের মাধ্যমে প্রাচীন বন্ধুত্ব ও সুদৃঢ় বন্ধন ছিন্ন হয়ে যায়। কখনো বিপক্ষ দলের ওপর চড়াও ও আগ্রাসী হওয়ার মানসিকতা তৈরি হয়। এর পথ ধরে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়। এতে জীবন, সম্পদ ও সম্মানের ব্যাপক হানি ঘটে। বিবাদ ও বিতর্কের ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা করা হলো : কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হওয়া আল্লাহ তাআলা শবেকদরের মতো মহান রাতের সুনির্দিষ্ট সময়ের বিষয়টি শুধু বিতর্ক বা বিবাদের কারণে তুলে নেন। (বুখারি, হাদিস : ৪৯) এতে বোঝা যায়, বিবাদ কল্যাণ থেকে বঞ্চিত করে। শয়তান তথা তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নেয় বিবাদের সময় ব্যক্তি তার সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে বিজয়ী হওয়ার চেষ্টা করে। হোক সেটা বৈধ বা অবৈধ উপায়। কিন্তু সেই সুযোগে শয়তান যেকোনো ব্যক্তিকে বিভ্রান্তিতে ফেলে দেয়। তৃতীয় পক্ষ এর থেকে ফায়দা হাসিল করে। সে বিষয়ে মুসলিম ইবনু ইয়াসার (রহ.) বলতেন, ‘তোমরা অবশ্যই ঝগড়া-বিবাদ থেকে সাবধান থাকবে। কেননা এটি একজন আলেমের অজ্ঞতার মুহূর্ত। আর এই মুহূর্তে শয়তান এর দ্বারা তার ত্রুটি বা বিভ্রান্তি কামনা করে।’ (দারেমি, হাদিস : ৪১৯) বিবাদে জড়িত ব্যক্তি আল্লাহর কাছে ঘৃণিত ঝগড়া বা বিতর্ককারী আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যক্তি। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর নিকট সেই লোক সবচেয়ে ঘৃণিত, যে অতি ঝগড়াটে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৪৫৭) তদন্ত ছাড়া বিতর্ক না করা তদন্ত করে নিশ্চিত না হয়ে শুধু কোনো কথা নিয়ে মানুষের সঙ্গে বিতর্ক করা উচিত নয়। কারণ শোনা কথা সত্যও হতে পারে আবার মিথ্যাও হতে পারে। এ জন্য শোনা কথা যাচাই না করে প্রচার করলে পাপের অংশীদার হতে হবে। এহেন কাজে রাসুল (সা.) সতর্ক করে বলেছেন, ‘একজন মানুষের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে সে যা শোনে তা-ই প্রচার করে বেড়ায়।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫) উত্তম পন্থায় বিবাদ-বিতর্ক অগত্যা কারো সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে গেলে উত্তম পন্থায় তার জবাব দিতে হবে, যেন এতে কোনো ক্ষতি না হয়, মানসিকভাবে কেউ যেন আঘাত না পায়, কাউকে খাটো করা না হয় বা তাদের প্রতি ঠাট্টা-বিদ্রুপ প্রকাশ না পায়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহ্বান করো প্রজ্ঞা ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে এবং তাদের সঙ্গে বিতর্ক করো উত্তম পন্থায়। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক ভালোভাবেই জানেন কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি ভালোভাবেই জানেন কে সুপথপ্রাপ্ত হয়েছে।’ (সুরা নাহল, আয়াত : ১২৫)

0 Comments

Your Comment