মহান আল্লাহর বিশেষ কল্যাণ লাভ করে যারা

মহান আল্লাহ বান্দার চিরকল্যাণকামী। তিনি বান্দার জন্য সহজ চান, কঠিন চান না। সর্বদা বান্দার কল্যাণ চান। আল্লাহ যাদের কল্যাণ চান, তাদের সম্পর্কে আলোচনা করা হলো : ইসলামের জন্য অন্তর উন্মুক্ত : আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তার অন্তরকে ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘যার বক্ষকে আল্লাহ ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন, অতঃপর সে তার রবের দেওয়া জ্যোতির মধ্যে আছে।’ (সুরা জুমার, হাদিস : ২২) বিপদাপদে শান্ত : কখনো কখনো বিপদাপদ মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বড় নিয়ামত। তিনি এর মাধ্যমে বান্দাকে পরীক্ষা করেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর অবশ্যই আমরা তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, ধন ও প্রাণের ক্ষতির মাধ্যমে এবং ফল-শস্যাদি বিনষ্টের মাধ্যমে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৫৫) আল্লাহ তাআলা কোনো নেককার ব্যক্তির কল্যাণ চাইলে তাকে বিপদে ফেলেন। হাদিসে এসেছে, আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করিম (সা.)-এর কাছে ছিলাম, তখন তিনি ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। আমি তাঁর ওপর আমার হাত রাখলে তাঁর গায়ের চাদরের ওপর থেকেই তাঁর দেহের প্রচণ্ড তাপ অনুভব করলাম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! কত তীব্র জ্বর আপনার। তিনি বলেন, আমাদের (নবী-রাসুলদের) অবস্থা এমনই হয়ে থাকে। আমাদের ওপর দ্বিগুণ বিপদ আসে এবং দ্বিগুণ পুরস্কারও দেওয়া হবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! কার ওপর সর্বাধিক কঠিন বিপদ আসে? তিনি বলেন, নবীদের ওপর। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! তারপর কার ওপর? তিনি বলেন, তারপর নেককার বান্দাদের ওপর। তাদের কেউ এতটা দারিদ্র্যপীড়িত হয় যে শেষ পর্যন্ত তার কাছে তার পরিধানের কম্বল ছাড়া আর কিছুই থাকে না। তাদের কেউ বিপদে এত শান্ত ও উত্ফুল্ল থাকে, যেমন তোমাদের কেউ ধন-সম্পদ প্রাপ্তিতে আনন্দিত হয়ে থাকে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০২৪) সত্যবাদী সঙ্গী : আল্লাহ যখন কোনো নেতার কল্যাণ চান, তখন তাঁর উত্তম সঙ্গী দান করেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা যখন কোনো নেতার জন্য কল্যাণের ফায়সালা করেন, তখন তিনি তাকে সত্যবাদী, ন্যায়নিষ্ঠ উজির দান করেন। যদি সে (নেতা) কিছু ভুলে যায়, তখন সে (উজির) তাকে তা স্মরণ করিয়ে দেয়। আর আমির যদি তা স্মরণ রাখে, তখন উজির তাকে সাহায্য করে। পক্ষান্তরে আল্লাহ তাআলা কোনো নেতার জন্য অকল্যাণের ফায়সালা করলে তাকে অযোগ্য উজির দান করেন। ফলে যখন সে (নেতা) কিছু ভুলে যায়, তখন সে (উজির) তাকে তা স্মরণ করিয়ে দেয় না। আর নেতা যদি স্মরণ রাখে, তখন সে তাকে সাহায্য করে না। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৯৩২)

0 Comments

Your Comment