আল্লাহতায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন। দিয়েছেন আমাদের বেঁচে থাকার জন্য যা যা প্রয়োজন সব। অক্সিজেন, পানি, গ্যাস, নবায়নযোগ্য শক্তি, ফলমূল, ফুল-ফসল সব দিয়ে ভরে রেখেছেন আমাদের চারপাশ। এসব জীবনোপকরণ থেকে আমাদের যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকু খাওয়া ও গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভক্ষণ ও গ্রহণে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা আহার এবং পান কর, আর অপচয় করো না; তিনি (আল্লাহ) অপচয়কারীদের ভালোবাসেন না।’ (সুরা আরাফ : ৩২)। শুধু খাদ্য নয়; গ্যাস, বিদ্যুৎ কোনোটিই অপচয় করার জায়েজ নেই। ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। বাংলাদেশে চলমান বিদ্যুৎ সংকটেরও অন্যতম কারণ অপচয়। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় ফ্যান বা লাইটের সুইচ বন্ধ করেছি কি-না তা আমরা অনেকে খেয়াল করি না। প্রয়োজন অপ্রয়োজনের বিবেচনা না করে কেবল আভিজাত্যের প্রতিযোগিতায় এসিসহ নানা বৈদ্যুতিক জিনিসপত্রের ব্যবহার করেন অনেকে। টয়লেট থেকে বের হয়ে লাইটটি বন্ধ করি না। অপ্রয়োজনেই সারারাত ঘরের লাইট জ্বালিয়ে রাখি, সামান্য কারণে আলোকসয্যা ও অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার করে বিদ্যুৎ অপচয় করছি। বাড়ির মালিকই তো বিদ্যুৎ বিল দেন, ভাড়াটিয়া হয়ে আমি কেন কম ব্যবহার করব- এমন মানসিকতা অনেকের মাঝেই কাজ করে। ইসলামে তা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। রসুলুল্লাহ (সা.) অপচয়ের বিরুদ্ধে এতই কঠোর অবস্থানে ছিলেন যে, একটু পানিও অপ্রয়োজনে খরচ করতে নিষেধ করেছেন। একদা রসুলুল্লাহ (সা.) হজরত সা’দকে (রা.) অজুতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি ব্যয় করতে দেখে বললেন, ‘হে সা’দ! অপচয় করছ কেন? হজরত সা’দ (রা.) বললেন, অজুতে কি অপচয় হয়? নবীজি (সা.) বললেন, হ্যাঁ। প্রবাহমান নদীতে বসেও যদি তুমি অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করো তা অপচয়’ (ইবনে মাজা)। অপচয়কারীর একটি পরিণাম হলো, দারিদ্র্য তাকে দ্রুত ধরে ফেলবে আর আল্লাহ তাকে পথ প্রদর্শন করেন না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, নিশ্চয় আল্লাহ অপচয়কারী ও মিথ্যাবাদীকে পথ প্রদর্শন করেন না। (সুরা মুমিনুন : ২৮)।
0 Comments
Your Comment