গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির দাবি ২৩ হাজার টাকা না মানা শুধু দুঃখজনক নয়, লজ্জাজনক বলে মনে করেন মার্কিন কংগ্রেসের আট সদস্য। তাঁরা বলেছেন, যেটা নির্ধারণ করা হয়েছে তা যথেষ্ট নয়। ১৫ ডিসেম্বর মার্কিন কংগ্রেসের এ আট সদস্য মার্কিন অ্যাপারেলস অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনকে (এএএফএ) এক চিঠিতে এসব কথা বলেছেন। চিঠিতে সই করেছেন কংগ্রেস সদস্য ইলহান ওমর, জেমস পি ম্যাকগভার্ন, জ্যান শাকোস্কি, রাউল এম গ্রিহালভা, বারবারা লি, ডেভিড জে ট্রোন, আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-করটেজ ও সুজান ওয়াইল্ড। তাঁরা মূলত শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির দাবি মেনে নিতে সরকার ও তৈরি পোশাক খাতের উৎপাদকদের চাপ দিতে এএএফএ’র সভাপতি ও প্রধান নির্বাহী স্টিভেন ল্যামারকে চিঠিতে বলেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশের পোশাকশ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির দাবির প্রতি সমর্থন জানালেও কংগ্রেস সদস্যরা মনে করেন, শুধু কথায় কাজ হবে না। সেজন্য এএএফএ’র প্রতি তাঁদের চিঠিতে বলা হয়েছে, তারা যেন শ্রমিকদের আন্দোলনে দমনপীড়ন বন্ধ করতে তাৎক্ষণিক আহ্বান জানায়। তারা যেন শ্রমিকদের ২৩ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির দাবি মেনে নিতে এবং মজুরি নির্ধারণের প্রক্রিয়া উন্নত করতে সরকার ও মালিকপক্ষকে চাপ দেয়। তারা যেন বাংলাদেশের পোশাক সরবরাহকারীদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে সম্পর্ক রাখার অঙ্গীকার করে। ২৩ হাজার টাকা মজুরি দিতে যে ব্যয় বৃদ্ধি হবে, তার পুরোটা যেন পোশাকের মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। তারা যেন সংগঠন করার অধিকারসহ শ্রম ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে ব্যবসাবাণিজ্য ও সদস্য কোম্পানিগুলোর সরবরাহব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বজায় রাখে। তারা যেন শ্রমিক ও ইউনিয়ন নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা তুলে নিতে নির্দেশনা দেয়। তারা যেন সরবরাহকারীদের এ বিষয়ে সতর্ক করে দেয় যে শ্রমিক ও ইউনিয়ন নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের ও তাদের হয়রানি করা গ্রহণযোগ্য নয় এবং সে ক্ষেত্রে পোশাক কেনার সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। কারখানার মালিকদের ব্যক্তিগতভাবে ও শিল্পসংগঠনের ওপর প্রভাব খাটিয়ে এটা নিশ্চিত করে যে সম্প্রতি বন্ধ হওয়া কারখানার শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করা হবে। এ ছাড়া কংগ্রেস সদস্যদের চিঠিতে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের প্রক্রিয়া যেন বাইরের কারখানাগুলোর মতো ‘অন্যায্য’ না হয়, তা নিশ্চিত করতে এএএফএকে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সবশেষে চিঠিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র নিজের দেশে যে মূল্যবোধের চর্চা করে, বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় তার প্রতিফলন থাকা উচিত। বাংলাদেশের শ্রমিকদের এ আন্দোলন বিশ্বব্যাপী ন্যায্য মজুরি ও নিরাপদ কর্মপরিবেশের আন্দোলনের অংশ। এক দেশের শ্রমিকদের ন্যায্যতার আন্দোলনে সমর্থন করার অর্থ হলো বিশ্বের সবখানেই তা সমর্থন করা।
0 Comments
Your Comment