আবাসিক হলে আসন বরাদ্দ না দেওয়ায় এবং সশরীর ক্লাস শুরু করতে প্রশাসনের গড়িমসি করার প্রতিবাদ জানিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইনে ক্লাস করা বর্জন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২২টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ক্লাস বর্জনকারী সবাই ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের (৫২তম ব্যাচ) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার রাতে ক্লাস বর্জনের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেছেন শিক্ষার্থীরা। ওই ফেসবুক গ্রুপটি ৫২ ব্যাচের অফিসিয়াল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গ্রুপ হিসেবে পরিচিত বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষার্থী। ক্লাস বর্জনকারী বিভাগগুলো হলো সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, নৃবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ভূগোল ও পরিবেশ, পরিবেশ বিজ্ঞান, ইতিহাস, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ, বাংলা, ইংরেজি, চারুকলা, দর্শন, প্রত্নতত্ত্ব, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, গণিত, রসায়ন, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মেসী, প্রাণিবিদ্যা, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ, আইন ও বিচার বিভাগ। এছাড়া, এ তালিকায় ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি এবং বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটও রয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আবাসন সংকটের কারণ দেখিয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রায় ৫ মাস পরে গত ৩০ নভেম্বর তাদের অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা হয়। অথচ, একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও তারা হলে অবস্থান করে সশরীরে ক্লাস করতে পারছেন না। এদিকে আগামী ২২ শে ফেব্রুয়ারী থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পরবর্তী ব্যাচের (২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠানের ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। ফলে আবাসিক হলে আসন বরাদ্দ না দেওয়ায় এবং সশরীর ক্লাস শুরু করতে প্রশাসনের গড়িমসি করায় অনলাইনে ক্লাস করা বর্জন করতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এবিষয়ে জানতে চাইলে ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী নুসরাত মুনা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, একটি ব্যাচকে অনলাইনে রেখে পরবর্তী ব্যাচের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার আয়োজন আমাদের ব্যাচের কোন শিক্ষার্থী মেনে নিতে পারছে না। প্রশাসন জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে হলে উঠানোর কথা বললেও আশ্বস্ত হচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। ফলে এখন পর্যন্ত ২২ টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস বর্জন করেছে। যতদিন সশরীরে ক্লাস শুরু হবেনা ততদিন অনলাইনে ক্লাস করা হবে না। সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস বর্জনের বিষয়টি শুনেছি। নতুন হলে জনবল নিয়োগের কাজ শেষ পর্যায়ে। আশা করছি, জরুরি ভিত্তিতে চলতি মাসে তাদেরকে আবাসিক হলে উঠাতে পারবো এবং হলে উঠানো হলে তারা সশরীরে ক্লাস করতে পারবে।
0 Comments
Your Comment