জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৪৯ ব্যাচের সাহমিনা আক্তার দিতি নামে এক শিক্ষার্থীকে যাত্রীবাহী বাসে হেনস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অসদাচরণ আচরণ ও হাফ ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে যাত্রাবাহী রাজধানী পরিবহনের ৩৭টি বাস আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার বিকেল ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ঢাকা ও নবীনগরগামী উভয় লেনে বাসগুলো আটক করা হয়। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, ওইদিন বিকেল সোয়া ৩টার দিকে রাজধানী পরিবহনের একটি বাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক এলাকা থেকে সাভারের পল্লিবিদ্যুৎ এলাকায় যাচ্ছিলেন তিনি। পথিমধ্যে বাসের হেল্পার তোফাজ্জলকে স্টুডেন্ট ভাড়া ৫ টাকা দিতে চাইলে হেল্পার ১০ টাকা ভাড়া দাবি করে। সেসময় ১০ টাকা ভাড়া দিলেও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে অসদাচরণ করেন হেল্পার তোফাজ্জল ও চালক আসাদুল। পরবর্তীতে স্মৃতিসৌধ এলাকায় গেলে বাসটিকে দাঁড় করিয়ে যাত্রী উঠাতে থাকেন হেল্পার। এসময়, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানো নিয়ে প্রশ্ন করলে গাড়ির হেল্পার ভুক্তভোগীর সাথে কথা কাটাকাটি করেন। একপর্যায়ে ঘটনাটি ভুক্তভোগী তার বিভাগের বন্ধুদের জানালে তারা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উভয় লেনে রাজধানী পরিবহনের বাসগুলো আটক করা শুরু করেন। ওইদিন রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত পরিবহনটির ৩৭টি বাস আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আল আমিন। তবে সরজমিনে ঘুরে ওইসময় মোট ২৯ টি বাস আটক দেখা গেছে। তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন- কয়েকটি বাস আগেই চলে গেছে। এদিকে, ওইদিন রাত সাড়ে ৮ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের উপস্থিতিতে বাস শ্রমিক সমিতির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তার বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময়, বাস আটককালে তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম তার মুঠোফোন হারিয়ে যাওয়ারও অভিযোগ করেন। এসময়, শিক্ষার্থীসহ সকল যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং হাফ ভাড়ার নিয়ম বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দেন শ্রমিক সমিতির নেতারা। পাশাপাশি তারা হারিয়ে যাওয়া মুঠোফোনের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি বাস বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অধীনে রেখে বাকি বাসগুলো ছাড়িয়ে নিয়ে যান। এবিষয়ে জানতে চাইলে বাস শ্রমিক সমিতির সহ-সভাপতি আবু হাসান শেখ বলেন, অভিযুক্ত চালক ও হেল্পার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিত করা এবং যাত্রী হয়রানি বন্ধের জন্য আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আমাদের একটি বাস রেখে বাকি বাসগুলো নিয়ে যাচ্ছি। আগামীকাল বাস মালিকপক্ষসহ এসে আলোচনা বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
0 Comments
Your Comment