জাবিতে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মশাল মিছিল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে মশাল মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মিছিলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে শিক্ষকরাও অংশগ্রহণ করেন। রবিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে মিছিলটি শুরু হয়। পরে মীর মশাররফ হোসেন হল, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া, ছাত্রীদের আবাসিক হল, প্রান্তিক গেট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে মিছিলটি শেষ হয়। এসময়, বিক্ষুব্ধরা ‘ক্যাম্পাসে ধর্ষণ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘দর্শকের বিরুদ্ধে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘প্রশাসনের বিরুদ্ধে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘বাহান্নর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার’, ‘অ্যাকশন টু একশন ডাইরেক একশন’, অবৈধ ছাত্র, মানি না মানবো না’, ধর্ষকের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ইত্যাদি স্লোগান দেয়। সমাবেশে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৭ বছর শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর ধর্ষকদের নয়। আমরা প্রশাসনকে বলে দিতে চাই এই ক্যাম্পাসে ধর্ষকদের মদদ দাতাদের কোন ঠাঁই নাই। এই বিশ্ববিদ্যালয় যে গণরুম কালচার চলে আসছে এই কালচারে কোন বন্ধুর সম্পর্ক গড়ে ওঠে না। এখনে গড়ে উঠে মাদকের সম্পর্ক অপরাধের সম্পর্ক। বিশ্ববিদ্যালয় আমাদেরকে সিস্টেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষকে পরিণত করেছে। গণরুম কালচাল একজন শিক্ষার্থীর মানসিকতা পরিবর্তন করে দেয়। তার মানসিকতা বিকৃত করে ধর্ষকে পরিণত করতে সহায়তা করে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আহসান লাবীব বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ধর্ষণের ঘটনায় আমাদের এতদিনের যে ধারণা ছিল যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে নিরাপদ, তা আর রইল না। আমরা জোর গলায় বলতে চাই, এই ক্যাম্পাসে ধর্ষকদের কোন জায়গা নেই, ধর্ষকদের যারা লালন করে সেই কুলাঙ্গারদেরও কোন স্থান নেই। যে সংগঠন, যে শিক্ষক, যে রক্ষক এদের মদদ দেয় তাদেরকে অবিলম্বে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করতে হবে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার (একাংশের) আহবায়ক আলিফ মাহমুদ অবিলম্বে অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বলেন, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের নিকট নিরাপদ নয়, সেখানে বহিরাগত কিভাবে নিরাপদ থাকবে। যখন শিক্ষার্থীরা দেখে তারই শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনি স্ট্রাকচার্ড কমিটি হওয়ার পরেও নিরাপদে ক্লাস নিতে পারেন, সেখানে নিজেরা করলে দোষ কোথায়? এম এইচ হলের অছাত্রদের দাপটে বিভিন্ন সময়েই ছিনতাই, লুটপাট, চাঁদাবাজির খবর আমরা দেখি। প্রশাসনকে বারংবার তাগাদা দেয়ার পরেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেন না অথবা অভিযোগ গেলেও তা আড়াল করেন। আমরা প্রশাসনকে হুশিয়ার করে বলতে চাই, অনতিবিলম্বে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনুন। নইলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবো।’

0 Comments

Your Comment