আদালত প্রাঙ্গণ থেকে কনে অপহরণ, উদ্ধারে গিয়ে আহত ৪ পুলিশ

মাগুরায় জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণ থেকে অপহৃত হওয়া এক কনেকে উদ্ধার করতে গিয়ে অপহরণকারীদের হামলায় ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সোমবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে পুলিশ অপহৃত মেয়েটিকে উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করলেও পুলিশের উপর হামলা এবং অপহরণের ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি বলে জানা গেছে। পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাগুরার সদর উপজেলার বেঙ্গা বেরইল গ্রামের এক পরিবার তাদের মেয়েকে বিয়ে রেজিস্ট্রির উদ্দেশ্যে সোমবার দুপুরে মাগুরা জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়। এ সময় মাগুরা সদর উপজেলার কাশিনাথপুর গ্রামের রজব আলী মোল্লার ছেলে জামির হোসেন বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ের কনেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণকারীরা মেয়েটিকে শহরতলী ইটখোলার সোনালী ইটভাটায় নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে। এ ঘটনার পর থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ বিকাল ৪টার দিকে ওই ইটভাটায় গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। এ সময় সোনালী ইট ভাটার ম্যানেজার জামির হোসেনের নেতৃত্বে ভাটাশ্রমিকরা লাঠিসোঠা নিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে মেয়েটিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। অপহরণকারীদের হামলায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাফিজ, এরশাদ, সাইফুল ও ওমর নামে ৩ কনস্টেবল হয়। পরে সদর থানার অতিরিক্ত পুলিশ এবং ডিবি পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তারা অপহৃত মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অপহরণের শিকার সেই নারী বলেন, ১২ বছর আগে মাগুরার সদর উপজেলার দেড়য়া গ্রামের দুলাল মোল্লার ছেলে ফারুকের সাথে আমার বিয়ে হয়। কিন্তু তার নানা নির্যাতনের কারণে চারবছর আগে আমাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। ওই ঘটনার পরও আমার পরিবার নতুন করে বিয়ে ঠিক করলে পূর্বের স্বামী বারবার বাধা দিয়ে আসছে। সোমবার একইভাবে আমার পূর্বের স্বামীর ইন্ধনে জজ আদালতে বিয়ের আসর থেকে আমাকে তুলে নিয়ে ভাটায় আটকে মারধর করে। সেখানে আমার ছোটভাই উপস্থিত হলে তাকেও মারাত্মকভাবে পিটিয়ে আহত করেছে। মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) দেবাশীষ কর্মকার পুলিশের উপর হামলা ভাঙচুর এবং গুলি বর্ষণের ঘটনা স্বীকার করে বলেন, অপহরণের খবর পেয়ে সোনালী ভাটায় গিয়ে দেখা যায় কয়েকজন মিলে মাসুরা নামের ওই মেয়েটিকে আটকে নির্যাতন চালাচ্ছে। এ অবস্থায় তাকে উদ্ধারের পর পুলিশ ভ্যানে ওঠানো হলে ভাটা শ্রমিকেরা পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে মেয়েটি ও তার ভাইকে মারধর করে। এ সময় তারা পুলিশের উপরও হামলা চালায়। অপহরণের ঘটনায় ব্যবহৃত ৪টি মোটরসাইকেল ওই ইটভাটা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।

0 Comments

Your Comment