১৯৯০ সালে প্রবল গণআন্দোলনে ক্ষমতা ছাড়ার মাত্র দুই মাসের মধ্যে জেল থেকে পাঁচটি আসনে জিতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে দারুণভাবে ফিরে এসেছিলেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ। এরপর বিভিন্ন সময়ে দলটির অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা অন্য দলে যোগ দিয়ে কিংবা দল ভেঙে বেরিয়ে গেলেও ২০১৯ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নির্বাচনি রাজনীতিতে জাতীয় পার্টির গুরুত্ব ধরে রাখতে পেরেছিলেন তিনি। তার অবর্তমানে আগামী ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হচ্ছে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি। পার্টির পক্ষ থেকে দলীয় মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু প্রায় প্রতিদিনই বনানী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এককভাবে ভোট করার কথা বললেও আসন সমঝোতার আশায় আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করে চলেছেন। জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের কাছে অন্তত ৫০টি আসনে সমঝোতা চায়। যেখানে থাকবে না নৌকা প্রতীকসহ দলটির স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থী। আসন সমঝোতার দাবিতে অনড় দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। গত তিন সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট ও সমঝোতা করে ভোট করা জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা এখন টেনশনে। আগামী ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনের আগেই সমঝোতা চান তারা। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানায়, আসন সমঝোতা নিয়ে একের পর এক বৈঠক হচ্ছে। সর্বশেষ বুধবারের বৈঠকে জাপা ৪৫ জনের একটি তালিকা আওয়ামী লীগের কাছে হস্তান্তর করে। ৩৫ থেকে ৪০টি আসনে ছাড় পাওয়ার আশা করছে দলটি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আসন সমঝোতা নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টি একাধিক বৈঠক করলেও এখনো কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি। বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে কঠোর গোপনীয়তা অবলম্বন করছে দল দুটি। এবার নির্বাচনকে অর্থবহ করতে জাতীয় পার্টির কর্মীবান্ধব নেতাদের প্রাধান্য দিতে চায় ক্ষমতাসীনরা। বিশেষ করে জাতীয় পার্টির যেসব সংসদ সদস্যরা এলাকায় শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছেন তাদের আবার সংসদে আনার বিষয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মনোনয়ন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন দলটির অধিকাংশ এমপি।
0 Comments
Your Comment