মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর উপর্যুপরি হামলায় প্রাণ বাঁচাতে পালাচ্ছে দেশটির সরকারি বাহিনী। মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর আরও দুটি হেডকোয়ার্টার দখলে নেওয়ার দাবি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। বিদ্রোহীদের হামলায় গতকালও কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যং উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও ৬৪ সদস্য পালিয়ে এসেছে বাংলাদেশে। এ নিয়ে গত কয়েকদিনে ৩২৮ বিজিপি সদস্য প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। তাদের অনেকেই আহত। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিজিবি পালিয়ে আসাদের নিরস্ত্র করে আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এদিকে গতকাল সকালেও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম-তুমব্রু সংলগ্ন বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। যদিও গত কয়েকদিনের চেয়ে গুলির শব্দ কিছুটা কমেছে। তবে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও সরকারি বাহিনীর এ যুদ্ধে ওপার থেকে ছুটে আসা গুলিতে বাংলাদেশে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছে অনেকে। পুড়ে গেছে ঘরবাড়ি, দোকানপাট। আতঙ্কে জনশূন্য হয়ে গেছে সীমান্ত এলাকা। ঘুমধুম-তুমব্রুর অন্তত ৫ হাজার মানুষ এখন ঘরছাড়া। তারা অন্যত্র আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। সামরিক বাহিনীর হেডকোয়ার্টার দখল : গত কয়েকদিনের যুদ্ধে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটি ও প্রহরাচৌকি দখলে নিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মি। সোম ও মঙ্গলবার সামরিক বাহিনীর আরও দুটি বড় হেডকোয়ার্টার আরাকান আর্মি দখল করে নিয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী। এ দুটি হেডকোয়ার্টার হলো রাখাইন রাজ্যের মরাউক ইউ ও কাউকতোয়া টাউন এলাকায়। আরাকান আর্মি বলেছে, তারা মরাউক ইউ অঞ্চলে কয়েক দিন তীব্র যুদ্ধের পর সোমবার সকালে দখল করে নিয়েছে লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন (এলআইবি) ৩৭৮ হেডকোয়ার্টার। মঙ্গলবার দখল করেছে পাশের এলআইবি ৫৪০ হেডকোয়ার্টার। পাশাপাশি হামলা চালিয়েছে এলআইবি ৩৭৭ ঘাঁটিতে। এ তিনটি ব্যাটালিয়ন মরাউক ইউ আর্কিওলজিক্যাল মিউজিয়ামে গোলা নিক্ষেপ করছিল। এটি হলো মরাউক ইউ কিংডমের ঐতিহাসিক রাজধানী। এ ছাড়া ২ ফেব্রুয়ারি কাউকতোয়া টাউনশিপের এলআইবি ৩৭৬ হেডকোয়ার্টার দখল করে আরাকান আর্মি। হামলা চালায় মিনবিয়া, কাউকতোয়া ও মরাউক ইউ টাউনে।
0 Comments
Your Comment