মতিউরের স্ত্রী লায়লা সম্পদ রক্ষায় মরিয়া

পরিবারের দুর্নীতির অভিযোগ ধামাচাপা দিতে ‘টাকা দিয়ে’ সব ম্যানেজ করতে চান জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ। গত বুধবার তিনি উজান-ভাটি রেস্টুরেন্টে বৈঠক করেন নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের নিয়ে। পরদিন বৃহস্পতিবার যোগ দেন উপজেলা পরিষদ বৈঠকে। এর আগে সাক্ষাৎ করেন একজন প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে। যোগাযোগ করছেন প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে। তবে মতিউর কোথায় বলছেন না কাউকে। নিজের ধনসম্পদ রক্ষায় এখন তিনি মরিয়া। লায়লার হঠাৎ বেপরোয়া অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কার ক্ষমতায় লায়লা কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছেন না? ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনার কান্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ‘কেঁচো খুঁড়তে কেউটে সাপের’ মতো একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে মতিউর রহমানের। সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে। তার নামে প্রায় ২৮ বিঘা জমি ও ৫টি ফ্ল্যাট রয়েছে; এর মধ্যে ঢাকার মিরপুরে একটি ভবনেই রয়েছে চারটি ফ্ল্যাট। কলেজশিক্ষক লায়লা কানিজ বর্তমানে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক। তবে নির্বাচনের আগে লায়লা কানিজ নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় নিজের নামে ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী, যশোর ও নাটোরে মোট ৮৪৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ (২৫ দশমিক ৭০ বিঘা) জমি থাকার কথা বলেছেন। ফ্ল্যাটের হিসাব দিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার মিরপুরের মাজার রোডের এক ভবনেই চারটি ফ্ল্যাটের নম্বর উল্লেখ করেছেন। যার মূল্য দেখিয়েছেন ১ কোটি ৬১ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। যদিও ওই ভবনের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থেকে জানা গেছে, ভবনটির একেকটি তলায় চারটি করে অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। একেকটির আয়তন ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ বর্গফুট। নির্মাণের শুরু থেকে হস্তান্তর পর্যন্ত প্রতি বর্গফুট সাড়ে ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। সর্বনিম্ন ধরলেও এ চারটির দাম পড়ে অন্তত ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর বাইরে আরও একটি ফ্ল্যাট থাকার কথা হলফনামায় উল্লেখ থাকলেও ঠিকানা দেওয়া হয়নি। তবে সেটার মূল্য দেখানো হয় সাড়ে ৫৫ লাখ টাকা। তিনি একটি মৎস্য খামারের মালিক বলেও উল্লেখ করেছেন। মৎস্য খামার থেকে তিনি বছরে আয় করেন ১৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৪০ টাকা। তার ব্যাংকে জমা ছিল ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৩ হাজার ২৪১ টাকা। তাছাড়া আনন্দ শিপইয়ার্ড অ্যান্ড এসপি লিমিটেডে ২০ হাজার টাকার শেয়ার এবং আইসিবি, এওএল মামুন অ্যাগ্রোতে ৮ লাখ টাকার শেয়ার রয়েছে। তার কাছে স্বর্ণ রয়েছে ৩০ তোলা, যার বাজারমূল্য দেড় লাখ টাকা। এ ছাড়া ফ্রিজ, টিভি, ফ্যান ও মোবাইল বাবদ দেখানো হয়েছে ৩ লাখ টাকা। আসবাবপত্র রয়েছে ৭৫ হাজার টাকার।

0 Comments

Your Comment