দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ করে নির্বাচন কমিশন উপজেলা নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ শুরু করতে যাচ্ছে। তবে মার্চে প্রথম দিকে এসএসসি পরীক্ষা শেষ হলেই আবারও শুরু হবে রমজান। উপজেলা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ নিয়ে তাই দুই ধরনের চিন্তা করছে কমিশন। প্রথমত, রোজার আগে মার্চের শুরুতে প্রথম ধাপের ভোট করে বাকি ভোট রোজার পরে করা। দ্বিতীয়ত, রোজা শেষ করে এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে ধাপে ধাপে ভোট করার চিন্তা রয়েছে কমিশনের। ভোটের দিন তারিখ এখনো চূড়ান্ত করেনি কমিশন। কমিশন বৈঠকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হবে। দলীয় প্রতীকের এ নির্বাচনে যে কেউ চাইলেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবেন; এক্ষেত্রে প্রার্থীর সমর্থনে ১ ভাগ ভোটারের স্বাক্ষর সংগ্রহ করতে হবে। বিগত ২০১৯ সালে ৩ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাচন তফসিল ঘোষণা করেছিল ইসি। পাঁচ ধাপে হয়েছিল উপজেলা নির্বাচন। মধ্য ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি পরীক্ষা ও মধ্য মার্চেই রমজান শুরুর বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। আগামী সপ্তাহে কমিশনের অনুমোদন পেলেই তফসিল ঘোষণা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এবারও প্রথম ধাপে শ খানেক উপজেলা পরিষদের ভোট হতে পারে। চার-পাঁচ ধাপে ভোট শেষ করা হতে পারে। রোজার সময় তো ভোট করা হবে না। রোজার আগে প্রথম ধাপ ও পরে অন্য ধাপগুলো হবে। সেক্ষেত্রে উপজেলার সংখ্যা ও ভোটের তারিখ কমিশন সভায় চূড়ান্ত হবে।’ আইন অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের মেয়াদ হচ্ছে প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। আর নির্বাচন করতে হয় মেয়াদপূর্তির আগের ১৮০ দিনের মধ্যে। ইতোমধ্যে নির্বাচন উপযোগী উপজেলার তালিকাও সংগ্রহ করছে ইসি। সবশেষ ২০১৯ সালে ১০ মার্চ-জুনে পাঁচ ধাপে ভোট করা হয়। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, মার্চে প্রথমদিকে নির্বাচন উপযোগী হচ্ছে শতাধিক উপজেলা। তবে কমিশন এখনো এই নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেনি। দ্রুত এ নির্বাচন নিয়ে বৈঠক হতে পারে। বৈঠকে এসএসসি পরীক্ষা, রমজানের বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে। তবে এসএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে দিয়ে মার্চের শুরুতে যদি এক সপ্তাহ সময় বের করা সম্ভব হয়, তবে উপজেলার প্রথম ধাপের ভোট মার্চের শুরুতেও হতে পারে। এক্ষেত্রে চলতি মাসের শেষে বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে প্রথম ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। যদিও ইসির প্রাথমিক চিন্তা হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা ও রোজা শেষেই এ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা; কমিশনে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হলে রোজা শেষে এপ্রিলের মাঝামাঝিতে ধাপে ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শুরু হতে পারে। তবে সবকিছুই নির্ভার করছে নির্বাচন কমিশনের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের ওপর। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বতস্ত্র প্রার্থী হতে প্রার্থীর প্রার্থিতার অনুকূলে ওই উপজেলার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনযুক্ত স্বাক্ষর বা টিপসহি সংগ্রহ করতে হবে। জানা গেছে, ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা; লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ১২ মার্চ। আর ১২-১৩ মার্চ রমজান শুরু হতে পারে। আর এইচএসসি পরীক্ষা হতে পারে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে। তাই রমজান শেষে এইচএসসি পরীক্ষার আগের দুই মাসের মধ্যে উপজেলা নির্বাচন করতে হবে ইসিকে। তাই ভোটের তারিখ নির্ধারণের ক্ষেত্রে ইসি এসব বিষয় আমলে নেবে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।
0 Comments
Your Comment