যমুনার নাব্য সংকটে আটকে যাচ্ছে নৌকা

বগুড়ায় যমুনা নদীতে নাব্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ কারণে জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার বিভিন্ন অংশে অনেক নৌঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। যমুনার ডানতীর ঘেঁষে বিশালাকার চরাঞ্চল সৃষ্টি হয়েছে। এতে ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে নৌকা। নৌযান চলাচল না করায় বেশি বিপাকে পড়েছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। ঘোড়ার গাড়িতে কৃষিপণ্য পরিবহন করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। তাদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। এলাকাবাসী জানায়, যমুনা নদীতে নাব্য সংকট ও নদীজুড়ে সৃষ্টি হওয়া অসংখ্য ডুবোচরে কিছুদিন ধরে নৌকা আটকে যাচ্ছে। এ কারণে বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি নৌরুটে নৌচলাচল। সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাসনাপাড়া নৌঘাট, হাটশেরপুর নৌঘাট, নিজ বলাইল নৌঘাট এবং চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের আমতলী নৌঘাট নাব্য সংকটে বন্ধ হয়েছে। বন্ধ রয়েছে এসব ঘাটে নৌচলাচল। সদর ইউনিয়নের পারতিতপরল আলতাফ আলীর নৌঘাটেও নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। উপজেলার সবচেয়ে ব্যস্ততম সারিয়াকান্দি কালিতলা নৌঘাটেও একই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এ নৌরুটে কয়েকদিন আগেই ইজারাদারদের উদ্যোগে ড্রেজিং করা হয়েছে। এর পরও নৌকা আটকে যাওয়া থামছে না। এদিকে যমুনায় নৌযান চলাচল করতে না পারায় বেশি বিপাকে পড়েছেন চরবাসী। এ উপজেলার যমুনাচরের মানুষের চলাচলের প্রধান বাহন নৌকা। নদীর নাব্য সংকটে নৌযান চলাচল বন্ধ হওয়ায় ঘোড়ার গাড়িতে করে কৃষিপণ্য এবং তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পরিবহন করতে বাধ্য হচ্ছেন চরবাসী। এতে একদিকে যেমন সময় অপচয় বেশি হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়তি ভাড়া দিয়ে তাদের চলাচল করতে হচ্ছে বা কৃষিপণ্য পরিবহন করতে হচ্ছে। এলাকাবাসী জানায়, ১৯৫৮ সাল থেকে প্রমত্তা যমুনার ডানতীরে সারিয়াকান্দি এলাকায় নদীভাঙন শুরু হয়। ১৯৭৭ সালের পর এই ভাঙন ভয়াবহ রূপ নেয়। বিভিন্ন সময়ে ডান তীরের ১০৫টির বেশি গ্রাম নদীভাঙনের শিকার হয়েছে। এসব গ্রাম যমুনায় বিলীন হয়ে যায়। এর মধ্যে অন্তারপাড়া, ধরবন, মানুরপাড়া, সাহানবান্ধা, নিজতিতপরল, কুমারপাড়া গ্রাম রয়েছে। যমুনার পানির প্রবল স্রোতধারা প্রবাহিত হওয়ায় এর গতিপথ হয় ডানতীর ঘেঁষে। এরপর ১৯৭৭ সালে শুরু হয় নদী শাসনের কাজ। ফলে উজান থেকে বয়ে আসা পলিজমে উপজেলার চালুয়াবাড়ী, হাটশেরপুর, কাজলা, কর্ণিবাড়ী এবং সারিয়াকান্দি সদরের মৌজায় বিশালাকার চর সৃষ্টি হয়েছে।

0 Comments

Your Comment