ফুলছড়ি পাক হানাদার মুক্ত দিবস আজ

৪ ডিসেম্বর গাইবান্ধার ফুলছড়ি পাক হানাদার মুক্ত দিবস। মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়ে উপজেলা সদরকে হানাদার মুক্ত করে। এদিন ফুলছড়িকে মুক্ত করতে গিয়ে ৫ বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ২ বেসামরিক ব্যক্তি শাহাদত বরণ করেছিলেন। ৭১’ এর স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী বাংলায় “পোড়ামাটি নীতি” বাস্তবায়নের জন্য জ্বালাও-পোড়াওসহ ধ্বংসযজ্ঞের চরম সীমায় পৌঁছায়। তখন ফুলছড়ির মাটি ও মানুষকে রক্ষার জন্য ১১নং সেক্টরের অধীনে মুক্তিবাহিনীর একটি বিশাল দল ফুলছড়ি থানা সদরের অদূরে ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্ব তীর মুক্তাঞ্চল গলনার চরে অবস্থান নেয়। সেক্টর কমান্ডার গৌতম চন্দ্র মোদকের নেতৃত্বে ফুলছড়ি সেনাশিবির আক্রমণের পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা মোতাবেক ১৯৭১ সালের ৩ডিসেম্বর গভীর রাতে মুক্তিযোদ্ধা গেরিলা কমান্ডার সামছুল আলম, কমান্ডার নাজিম উদ্দিন, আ.জলিল তোতা, এনামুল হকের পরিচালনায় মুক্তিযোদ্ধারা ৪টি দলে বিভক্ত হয়ে ব্রহ্মপুত্র পাড়ি দিয়ে ফুলছড়ি থানা সদরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। ৪ ডিসেম্বরে ভোরে গেরিলা কমান্ডার সামছুল আলমের দলটি সর্বপ্রথম ফুলছড়ি থানা (পুলিশ স্টেশন) আক্রমণ করে। উপর্যুপরি গ্রেনেড হামলা ও ব্যাপক গোলাগুলি শুরু হলে অপর ৩টি দলের মুক্তিযোদ্ধাগণ একসাথে চারিদিক থেকে গোলা বর্ষণের মাধ্যমে পাক সেনাশিবিরের দিকে এগোতে থাকে। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফুলছড়ি থানা পুলিশের সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট আত্মসমর্পণ করে। মুক্তিযোদ্ধারা থানার অস্ত্রাগারের সব অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। ১১নং সেক্টর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা গৌতম চন্দ্র মোদক জানান, শহীদদের মৃতদেহ উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী সাঘাটা উপজেলার সেগুনা ইউনিয়নের খামার ধনারুহা গ্রামে এনে কবরস্থ করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই ৫ শহীদের সম্মানার্থে ইউনিয়নটির নাম পরিবর্তন করে মুক্তিনগর রাখা হয়। বর্তমান সরকারের আমলে শহীদদের কবরস্থানগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছে। আজকের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের স্বজনদের সম্মান ও মর্যাদা জানাতে সাঘাটার মুক্তিনগরে আয়োজন করা হয় নানা কর্মসূচি। সর্বস্তরের মানুষ এই স্মৃতিস্মম্ভে এসে ফুল দিয়ে শহীদ ও তাদের স্বজনদের সম্মান জানান।

1 Comments

VSiXqYNjsAP
VSiXqYNjsAP

Web Developer

bHxhgovRPMimZUIw

Your Comment