খুলনায় দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, পুলিশ সদস্য নিহত

খুলনার নগরীর গল্লামারী সড়ক, জিরোপয়েন্ট, খুলনা-রূপসা বাইপাস এলাকায় পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সুমন কুমার ঘরামী (৩০) নামে একজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া শিক্ষার্থীসহ আরও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। এতে আহত হয় অর্ধশতাধিক। তাদের মধ্যে ১৯ জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার দুপুর ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে মিছিলকারীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে। তবে ছাত্র-জনতা একত্রিত হয়ে পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। শিক্ষার্থীরা জানায়, দুপুর পৌনে ৩টার দিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের মিছিলে বাধা দেয় পুলিশ। এতে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে পুলিশ টিয়ারশেল ছুড়তে ছুড়তে জিরোপয়েন্টের দিকে চলে যায়। পরে শিক্ষার্থীরাও একত্রিত হয়ে পুলিশকে ধাওয়া দেয়। এ সময় পুলিশ ও ছাত্র-জনতার মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশ জিরোপয়েন্ট থেকে আরও পিছু হটে খুলনা-রূপসা বাইপাস রোডে হরিণটানা থানার গেটে অবস্থান নেয়। তবে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সেখানেও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়তে থাকে। পরে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়কে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে গল্লামারী এলাকায় পুলিশের সাথে শিক্ষার্থীদের আবারও সংঘর্ষ হয়। এ সময় টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত সুমন কুমার ঘরামীসহ আরও তিন পুলিশ সদস্যকে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালের নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এছাড়া সরকারি পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষার্থী মোস্তাকিম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নুরুজ্জামান নাবিল, চাকরিজীবী সৌরভ আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল্লাহ সাফিলসহ (২২) ৭ জন গুলিবিদ্ধ হয়। সংঘর্ষে আহত ১৯ জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ অহেতুক টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। এতে অনেকে আহত হয়েছে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক জানান, শান্তিপূর্ণভাবে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি পালন করা কথা ছিল। কিন্তু তারা পুলিশের ওপর হামলা করেছে। এতে পুলিশ হতাহত হয়েছে।

0 Comments

Your Comment

Subscribe For

Weekly Newsletter

Subscribe to stay up-to-date on all the latest news