ঢাকার মোহাম্মদপুরে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসার কাজে নিয়োজিত চা শ্রমিক পরিবারের সন্তান প্রীতি ওরাংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তসাপেক্ষে শাস্তি চেয়েছেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতারা। আজ সোমবার দুপুরে তারা মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মিরতিঙ্গা চা বাগানের বাড়িতে প্রীতির পরিবারের খোঁজখবর নিতে যান। সেখানে এ শাস্তির দাবি জানান ফেডারেশনের নেতারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক দীপংকর ঘোষ, সাংগঠনিক সম্পাদক কিরণ শুক্ল বৈদ্য, অর্থ সম্পাদক প্রেম কুমার পাল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ নন্দী এবং স্থানীয় নেতারা। ফেডারেশনের নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে প্রীতির বাবা-মা জানান, ডেইলি স্টারের মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি মিন্টু দেশোয়ারার মাধ্যমে পত্রিকাটির নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় কাজে যায় তাদের ছোট মেয়ে প্রীতি। শুরু থেকেই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে প্রীতিকে তেমন যোগাযোগ করতে দেওয়া হতো না। ৬ ফেব্রুয়ারি যেদিন প্রীতি মারা যায়, সেদিন মিন্টু দেশোয়ারা তাদের শ্রীমঙ্গল যাওয়ার কথা বলেন। শ্রীমঙ্গল গেলে মিন্টু দেশোয়ারা তাদের মেয়ে মারাত্মক অসুস্থ বলে জানান এবং এখনই তার সঙ্গে ঢাকায় যেতে হবে বলেন। সাংবাদিক মিন্টু দেশোয়ারার সঙ্গে তারা ঢাকায় গেলে সরাসরি থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে জানতে পারেন, প্রীতি নবম তলা থেকে পড়ে মারা গেছে। এরপর প্রীতির লাশ নিয়ে বাড়ি চলে আসেন তারা। এ ঘটনায় মামলা হলো কি না সেটা তারা জানেন না বলেও জানান। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড অভিযোগ তুলে তারা প্রীতি হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। এসময় চা শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা প্রীতির পরিবারের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, সাংবাদিক মিন্টু দেশোয়ারার উচিত ছিল মেয়েটাকে স্কুলে পাঠানোর সামগ্রিক আয়োজন করা। তিনি তা না করে শিশুটিকে কাজে ঢুকিয়ে দিলেন, যা প্রচলিত আইনে নিষিদ্ধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। একই অপরাধে মিন্টু দেশোয়ারাও অপরাধী এবং তারও বিচার হওয়া দরকার। ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় এর আগেও ফেরদৌসী নামে আরেক শিশু গৃহশ্রমিক নবম তলা থেকে লাফ দিয়ে পড়ে আহত হয়। মেয়েটির মা মামলা করলেও তিনি আজও বিচার পাননি। আগের অপকর্মের বিচার হলে এমন নৃশংসভাবে মেয়েটাকে মেরে ফেলতে পারত না। এটা প্রকারান্তরে মৃত্যু নয়, সংঘটিত হত্যাকাণ্ড।
0 Comments
Your Comment