শূন্য থেকে প্রতিষ্ঠিত জীবন সংগ্রামী নিলুফা

জীবন যুদ্ধে সব দুঃখ, হতাশা আর বঞ্চনাকে পিছনে ফেলে জিরো থেকে আজ হিরোতে পরিণত হয়েছেন এক জীবন সংগ্রামী নারী নিলুফা বেগম। শূন্য থেকে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এই সফল নারী। এখন তার ব্যবসাসহ গরু, হাঁস ও কবুতর পালন করে ব্যস্ত সময় পার হয়ে যায়। এখন তার গড়ে প্রতি মাসে আয় প্রায় ২৫ হাজার টাকা। এমনটাই বলেন, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের গোলাপগঞ্জ ইউপির জগন্নাথপুর গ্রামের আ. রফিক ও গাফুরন বিবির মেয়ে নিলুফা বেগম। বাবা মা জীবিত। তবে সংগ্রামী নারী নিলুফা বেগম তার বাবার দুই স্ত্রীর মধ্যে ১ম স্ত্রীর একমাত্র মেয়ে। বাল্যবিয়ে হওয়ার ৬ বছরের মাথায় ভেঙে যায় সংসার। তিন সন্তান নিয়ে চোখে-মুখে দেখেন অন্ধকার। এরপরেও দমে না গিয়ে সংগ্রাম করে বেঁচে আজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন সংগ্রামী নারী নিলুফা বেগম। তবে আরও এগিয়ে যেতে সরকারী সাহায্য কামনা করেছেন তিনি। এখন সবার কাছে সে একজন অনুকরনীয় নারী। ২০২০ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নিলুফা বেগমের বিয়ে হয়। ১৫ বছর বয়সে ১ম সন্তান লিটন বাবুর জন্ম হয়। ১৭ বছর বয়সে জন্ম হয় ২য় ছেলে নুরনবীর আর ১৯ বছরে জন্ম হয় তার ৩য় ছেলে আলমের। স্বামী মাদকাসাক্ত হওয়ায় ৩য় ছেলের জন্মের ৪৫দিনের মাথায় তার সংসার ভাঙে। এরপর সংসার চালাতে বাসাবাড়ির কাজ করতে থাকে। বাসাবাড়ির কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় উত্যক্তের স্বীকারও হন। শেষে কোনো উপায় না পেয়ে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট গিয়ে তার জীবন কাহিনী বলেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার সব কিছু শুনে তাকে একটি সেলাই মেশিন এবং সামান্য কিছু নগদ অর্থ দেন। এরপর তিনি সেলাইয়ের কাজ শিখেন। প্রথমে কাপড় কিনে নারী ও শিশুদের পোষাক তৈরী করার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় তার ব্যবসা। ব্যবসার জন্য বাজারে দোকান দেন। বর্তমানে উপজেলার নিউ মার্কেটের ২৬নং কক্ষে তার ছেলে ফয়সালের নাম দিয়ে একটি দোকান রয়েছে। সেই দোকানে সারাদিন কাপড় বেচাকেনাসহ সেলাইয়ের কাজ করেন। নিলুফা বেগম জানান, এ ব্যবসা ছাড়াও একটি বেবসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে গরু পালন শুরু করেন। তার বাড়িতে রয়েছে ৬টি গরু ৩টি ছাগল ২০টি কবুতরসহ আছে ১০টি হাঁস। তিনি তার ব্যবসা ও গরু ছাগল পালন করে প্রায় ৩ লাখ টাকা মূল্যের বাড়ি করার জন্য সাড়ে ৪ শতক জায়গা কিনেছেন। মাঠে জমি বন্ধকি নিয়েছেন ১০ কাঠা। তার ভাষায় প্রতি মাসে তার আয় প্রায় ২৫ হাজার টাকা। তার ছেলেদের মধ্যে ২ ছেলে শ্রমিকের কাজ করে এবং ১ ছেলে তার মাকে কাজে সাহায্য করে থাকে। তবে শূন্য থেকে এ পর্যন্ত আসা এ নারীর আশা সরকারিভাবে কিছু সহযোগিতা পাওয়ার।

0 Comments

Your Comment

Subscribe For

Weekly Newsletter

Subscribe to stay up-to-date on all the latest news