আয়ব্যয়ে ভারসাম্যহীনতায় বেড়েছে টাকার সংকট

আয়ব্যয়ে ভারসাম্যহীনতায় ডলারের পাশাপাশি বেড়েছে টাকার সংকট। সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে সরকারের আয়ব্যয়ের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন ও অর্থ বিভাগের মূল্যায়নে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হচ্ছে না, সঞ্চয়পত্রের পাশাপাশি সরকার ব্যাংক ঋণ নেওয়া কমিয়ে দেওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের মার্চে শুরু হওয়া মহামারির কারণে দীর্ঘদিন লকডাউনে ছিল দেশ। ওই সময়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়েছিল। ফলে সরকারের রাজস্ব আয়ও কম হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও এনবিআর বহির্ভূত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। বিপরীতে আদায় হয়েছিল ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। পরের অর্থ বছরেও রাজস্ব আদায় হয়নি নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রায়। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছিল ৩ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকা। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব আদায় কমে যাওয়ায় সরকার ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক ঋণ নেওয়ার পাশাপাশি ব্যয় সংকোচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকটের পাশাপাশি আমানত প্রবাহ কমে যাওয়ায় টাকার সংকট বেড়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের দেওয়া শর্তের কারণে সঞ্চয়পত্র থেকে আর বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি স্বাভাবিক রাখতে ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে না সরকার। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা করপোরেট অংশ না নেওয়ায় বিকশিত হচ্ছে না বন্ড মার্কেট। ফলে এই মার্কেট থেকেও বেশি ঋণ নিতে পারছে না সরকার। একই সঙ্গে কমেছে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান। ফলে বৈদেশিক খাতে অর্থের প্রবাহ কমার পাশাপাশি টাকার সংকট আরও প্রকট হয়েছে। যদিও ২০২২ সালের মাঝামাঝি থেকে ব্যয় সংকোচন নীতি অনুসরণ করছে সরকার।

0 Comments

Your Comment