টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি ৩০০ কোটি টাকা বিক্রির আশা

ঈদ, পয়লা বৈশাখসহ যেকোনো অনুষ্ঠানে অনেক নারী পছন্দ করে থাকেন টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি। ঈদে তাঁতের শাড়ির বেচাকেনা এখনো তেমন জমে ওঠেনি। রোজার শেষ ১০ দিনের মধ্যেই শাড়ি বেচাকেনা জমে উঠবে। ঈদ ও পয়লা বৈশাখ একসঙ্গে ও কাছাকাছি হওয়ায় তাঁতের শাড়ি ভালো বিক্রি হবে। এবার দুই উৎসবকে ঘিরে অনন্ত ৩০০ কোটি টাকার তাঁতের শাড়ি বিক্রির আশা করছে তাঁত মালিকরা ও ব্যবসায়ীরা। টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি সংশ্লিষ্ট শ্রমিক, মালিক ও ব্যবসায়ীদের সবাই আশা করছেন, রোজার শেষ ১০ দিন ঈদের ভালো বেচাকেনা হবে ও পয়লা বৈশাখের উৎসব সামনে রেখে দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক মন্দা কাটিয়ে উঠতে পারবেন তারা। এ দুই উৎসবে এবার প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার শাড়ি ও তাঁতের নানা পোশাক বিক্রির আশা করছে টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স। দেশের পাশাপাশি অন্য দেশেও রপ্তানি হচ্ছে টাঙ্গাইলের শাড়ি। গত বছর ঈদ ও পূজা উপলক্ষে ভারতে রপ্তানি হয়েছিল টাঙ্গাইলের ৭৪ লাখ পিস শাড়ি। এবার রপ্তানি হয়েছে ৭৫ লাখ পিস শাড়ি। আর এ কারণেই ব্যস্ততা বেড়েছে টাঙ্গাইলের তাঁত পল্লীতে। আলো-আঁধারময় ছোট-বড় তাঁত শাড়ির কারখানায় দিনরাত বুননের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন নানা ধাপের কারিগররা। ভোর থেকে গভীর রাত অবধি চলছে মাকু আর শানার শব্দ। তাঁতির হাত ও পায়ের ছন্দে তৈরি হচ্ছে এক একটি বর্ণিল শাড়ি। গরমের কথা বিবেচনায় রেখে এবার শাড়িতে এসেছে বৈচিত্র্য আর নতুনত্ব। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাঁত পল্লীতে আসা-যাওয়া করছেন ক্রেতা-ব্যবসায়ীরা। সরেজমিন দেখা যায়, এখানে তাঁত পল্লীগুলোতে ৬০০ থেকে ২৫ হাজার টাকা দামের সুতি শাড়ি বিক্রি হচ্ছে। জামদানি, হাফ সিল্ক, মসলিন, অ্যান্ডি সিল্ক ও সফট সিল্ক বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক লাখ টাকা পর্যন্ত। তাঁত শ্রমিক গোর সেন জানালেন, একটা শাড়ি তৈরিতে দুই দিন সময় লাগে। আমরা বর্তমানে পৌনে ৭০০ টাকা মজুরি পাচ্ছি। এ দিয়ে আর সংসার চলে না। এ পেশা যে ছেড়ে দেব, তাও তো সম্ভব না। অন্য কোনো কাজ পারি না। পেটের তাগিদে এ পেশা ধরে রেখেছি। মহাজনে ঠিকমতো কাপড় বিক্রি করতে পারলে আমাদের কাজ দেয়। আর বিক্রি করতে না পারলে আমাদের কাজ দেয় না। এভাবেই চলছে।

0 Comments

Your Comment