ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগরে যুগ যুগ ধরে আখের রস থেকে তৈরি হচ্ছে তরল গুড়। যা স্থানীয়রা বলে লালি গুড়। লালি তৈরিতে ক্ষতিকর উপাদান মেশানো হয় না। শীতকালে বিভিন্ন পিঠা-পুলির সঙ্গে মুখরোচক লালি স্বাদে আনে ভিন্নতা। অনেকে মুড়ির সঙ্গে মেখেও স্বাদ নেন লালির। এ বছর এখানে প্রায় দেড় কোটি টাকার লালি বিক্রি হবে, আশা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। চাষের খরচ বাড়ায় এবং আখ চাষ কমে যাওয়ায় লালি উৎপাদন কমেছে, বলছেন সংশ্লিষ্টরা। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর, কসবা ও আখাউড়ায় বাণিজ্যিকভিত্তিতে আখ চাষ করা হয়। এসব আখের রস থেকে লালি উৎপাদন করেন চাষিরা। চলতি বছর বিজয়নগরে ২৫ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। এখান থেকে ১০০ টনেরও বেশি লালি উৎপাদন হবে। যার বাজারমূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। জানা গেছে, বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর, দুলালপুর ও বক্তারমুড়া গ্রামের অর্ধশতাধিক পরিবার বংশ পরম্পরায় লালি উৎপাদন করছে। প্রতি বছর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চলে লালি তৈরি ও বেচাকেনা। প্রতি কেজি লালি গুড় খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। লালি নিতে বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসছে বিজয়নগরে। অনেকে লালি নেওয়ার পাশাপাশি আখের রসও খেয়ে যাচ্ছেন। মহিষের চোখ ঢেকে ঘানি টানানোর মাধ্যমে আখ মাড়াই করে রস সংগ্রহ করা হয়। এরপর রস জমিয়ে ছেকে রাখা হয় বড় কড়াইয়ে। আখের রস দুই থেকে তিন ঘণ্টা জাল দিলে লাল রং ধারণ করে। তারপর নামানো হয় কড়াই থেকে। এভাবেই তৈরি হয় মুখরোচক লালি গুড়। বিজয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ জানান, লালি গুড় তৈরিতে কোনো ক্ষতিকর উপাদান মেশানো হয় না। এ জন্য এর জনপ্রিয়তা রয়েছে।
0 Comments
Your Comment