২২ বছরে কমেছে চা রপ্তানি

চার দশক আগে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি পণ্য ছিল চা। আর বর্তমানে এই পণ্যের রপ্তানি একেবারে তলানিতে নেমে এসেছে। গত ২২-২৩ বছরে যেখানে চা উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, সেখানে রপ্তানি কমেছে ১৬ গুণের বেশি। ২০২৩ সালে দেশের ১৭০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ চা উৎপাদনের পরও আশানুরূপ রপ্তানি বাড়ছে না। রপ্তানি বাড়াতে বাংলাদেশ চা বোর্ডের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নিয়েও সুফল মিলছে না। বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম এনডিসি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রপ্তানি বাড়াতে আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের আয়োজন করছি। লন্ডন টি এক্সচেঞ্জের সিইও আমাদের সঙ্গে প্রশিক্ষণে যোগ দিয়েছে। এর বাইরে ৪% ক্যাশ ইনসেনটিভ দেওয়া হচ্ছে। চায়ের মান বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। যাতে ধীরে ধীরে রপ্তানির পরিমাণ বাড়ে। চা শিল্পকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে পরিচিত করা এবং রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানা কর্মসূচিতে যুক্ত হচ্ছে চা বোর্ড। গত ১৯-২৩ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে গালফফুড-২০২৪ মেলায় অংশগ্রহণ করে বোর্ড। এ ছাড়াও রপ্তানিকারকদের জন্য আর্থিক প্রণোদনা, প্রশিক্ষণসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু এরপরও আশানুরূপ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি নেই বলে মনে করেন খাতসংশ্লিষ্টরা। চা বোর্ড সূত্র জানায়, ২০০১ সালে ৫ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল। আর ২০২২ সালে এসে চা উৎপাদিত হয় ৯ কোটি ৩৮ লাখ ২৯ হাজার কেজি। সে হিসাবে এই ২২ বছরে উৎপাদনের পরিমাণ বেড়েছে ১.৭৭ গুণ। ২০২৩ সালে উৎপাদনের পরিমাণ আরও বেড়ে ১০ কোটি ২৯ লাখ ১৮ হাজার কেজিতে পৌঁছেছে। বোর্ডের হিসাবে দেখা গেছে, গত ১০ বছরের উৎপাদন চিত্রে ধারাবাহিক উন্নতি হলেও উল্টো চিত্র রপ্তানিতে। বোর্ডের হিসাবে, ২০০১ সালে ১২ লাখ ৯২ হাজার কেজি চা রপ্তানি হয়। এর পরের তিন বছরও রপ্তানির এই ধারা অব্যাহত ছিল। ২০০৫ সালে ৯ লাখ কেজি রপ্তানির পর ২০০৬ সালে ৪ লাখ ৭৯ হাজার কেজিতে চলে আসে। যদিও ২০০৭ সালে আবারও ১০ লাখ কেজি এবং ২০০৮ সালে ৮ লাখ কেজির বেশি রপ্তানি হয়। তবে ২০০৯ সালে রপ্তানি ৩ লাখ কেজির ঘরে চলে আসে। এরপর ২০১০ সাল থেকে রপ্তানিতে রীতিমতো ধস নামে। ওই বছর রপ্তানি হয় মাত্র ৯১ হাজার কেজি চা।

0 Comments

Your Comment