জেলে গিয়ে স্ত্রীর প্রেমিককে হত্যার গল্প শোনালেন, অতঃপর...

নাটোরে গুরুদাসপুরে স্ত্রীর সাথে দাম্পত্য দ্বন্দ্বের মামলায় জেলে যাওয়ার দুঃখে কারাগারে বন্ধুর কাছে দুই বছর আগে শ্বশুরদের সাথে মিলে স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিককে হত্যার পরে লাশ গুমের গল্প শোনান আল হাবিব সরকার। খুনের এ তথ্য ফাঁসের পরেই শুক্রবার নিহতের মা গুরুদাসপুর থানায় বাদী হয়ে তিনজনের নাম এবং অজ্ঞাত দুইজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী আবু তাহের খলিফা (৫৫), তার মেয়ে তানজিলা খাতুন (২৮), জামাতা আল হাবিব সরকার (৩৫) ও তাদের আত্মীয় আশরাফুল ইসলামকে (৪২) গ্রেফতার করেছে র‍্যাব ও পুলিশ। নিহত মো. মফিজুল ইসলাম গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় খলিফাপাড়া এলাকার মো. আজাত মোল্লা ও মোছা. মাইনুর বেগমের ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, ২০২৩ সালে নভেম্বরে স্ত্রী তানজিলা বেগমের সাথে দাম্পত্য অশান্তি শুরু হয় আসামি আল হাবিব সরকারের। তানজিলা স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে জেলে যান আসামি আল হাবিব সরকার। সেখান আরেক বন্দী মো. জাকির মুন্সির সাথে পরিচয় ও পরে বন্ধুত্ব হয় হাবিবের। এরপর জাকির মুন্সির কাছে আসামি আল হাবিব সরকার স্ত্রীর পরকীয়া ও পরকীয়া প্রেমিককে হত্যার পরে লাশ গুমের কথা বলেন। সূত্র জানিয়েছে, হাবিবের স্ত্রী তানজিলা ও মফিজুল চাচকৈড় খলিফাপাড়ার একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে হাবিবের শ্বশুর আসামি আবু তাহের খলিফা ওরফে তারা খলিফা (৫৫), তানজিলার প্রেমিক মফিজুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে খুন করার হুমকি দেয়। ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল রাত ১১ টার দিকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তানজিলাকে দিয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মফিজুলকে তার শ্বশুর বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসা হয়। এরপর আসামি মো. আশরাফুল ইসলামসহ অন্যা আসামিরা তার মুখে কচটেপ দিয়ে আটকে রাখে। আসামিরা মফিজুলকে মাটিতে ফেলে দিলে আবু তাহের খলিফা মফিজুলকে পা দিয়ে মাটির সাথে চেপে ধরে। তখন আশরাফুল মফিজুলের বুকের উপর পা তুলে ধারাল শাবল দিয়ে বুকে আঘাত করে। এতে শাবল মফিজুলের বুকের ভেতর ঢুকে যায় এবং ঘটনাস্থলেই মফিজুল ইসলামের মৃত্যু হয়। এরপর আসামিরা মফিজুল ইসলামের মৃতদেহ একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে বাড়ির পাশের মাদ্রাসার সেফটি ট্যাংকির পাশে মাটিতে পুঁতে রাখেন। জাকির মুন্সি গত সপ্তাহে জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে হত্যাকাণ্ডের কথা মৃত মফিজুল ইসলামের মা-সহ এলাকার অন্যান্য লোকজনের কাছে বলেন। এরপর মৃত মফিজুল ইসলামের মা বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জ্বল হোসেন বলেন, বিধি অনুযায়ী গুমকৃত মফিজুল ইসলামের (২৫) লাশ গুরুদাসপুরের পুরানপাড়া মাদ্রাসার পানির সেফটি ট্যাংকির পাশ থেকে উদ্ধার করা হবে।

0 Comments

Your Comment

Subscribe For

Weekly Newsletter

Subscribe to stay up-to-date on all the latest news