ধুলায় কাবু রাজধানীবাসী

ভয়াবহ ধুলা দূষণের কবলে রাজধানীবাসী। ধুলার পুরু আস্তর জমে বিবর্ণ হয়ে গেছে গাছের পাতা। বদলে গেছে দালানকোঠার রং। দোকানের সাইনবোর্ডের লেখা ঢেকে গেছে ধুলায়। পথে বের হলে কাপড়ের ভাঁজে ভাঁজে জমছে ধুলাবালি, ঢুকছে নাক-মুখ দিয়ে। রাস্তার ধুলা ঢুকছে ঘরে। দিনে একাধিকবার মুছতে হচ্ছে ফ্লোর-আসবাবপত্র। দূষিত বায়ুতে ঘরে ঘরে অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্ট, সর্দি, কাশির রোগী। বৃষ্টিপাত বন্ধের পর গত অক্টোবর থেকে টানা পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে এই বিষবায়ু সেবন করছে রাজধানীবাসী। প্রায়ই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষে উঠে আসছে ঢাকার নাম। গত অক্টোবর থেকেই মারাত্মক দূষিত ঢাকার বাতাস। প্রায়ই বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের খেতাব লাগছে জনবহুল এই নগরীর গায়ে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান এয়ার ভিজ্যুয়ালের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত দুই মাসে এক দিনও নির্মল বাতাস পায়নি ঢাকাবাসী। ৩১ দিনের মধ্যে ছয় দিন ঢাকার বাতাস ছিল অস্বাস্থ্যকর, ২৪ দিন ছিল খুবই অস্বাস্থ্যকর ও এক দিন ছিল বিপজ্জনক মাত্রায় দূষিত। জানুয়ারিতে বাতাসে দূষণের মূল উপাদান পিএম ২.৫ (অতি সূক্ষ্ম বস্তুকণা)-এর গড় ছিল সহনশীল মাত্রার চেয়ে ৩৭ গুণ বেশি। কখনো কখনো তা ৫০ গুণ ছাড়িয়ে গেছে। ফেব্রুয়ারিতে ১৬ দিন ছিল অস্বাস্থ্যকর, বাকি দিনগুলো ছিল খুবই অস্বাস্থ্যকর। গতকাল বিকাল ৩টায়ও ঢাকা ছিল বিশ্বের ১১৭টি বড় শহরের মধ্যে তৃতীয় দূষিত বায়ুর শহর। বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) মতে, সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ হয় অপরিকল্পিত ও অনিয়ন্ত্রিত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি এবং নির্মাণকাজ থেকে, যা মোট দূষণের ৩০ শতাংশ। এদিকে দূষিত বায়ুর কারণে শ্বাসতন্ত্রের নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নগরবাসী। খিলক্ষেতের বাসিন্দা রুকাইয়া ইসলাম বলেন, সকালে দুই বাচ্চাকে নিয়ে স্কুলে যেতে হয়। আমার ডাস্ট অ্যালার্জি আছে। গত শীতের শুরু থেকেই হাঁচি, শুষ্ক কাশি ও সর্দিতে ভুগছি। দুই বাচ্চাও অধিকাংশ সময় অসুস্থ থাকছে। ওষুধ খেলে কয়েকদিন ভালো থাকে, আবার হয়।

0 Comments

Your Comment

Subscribe For

Weekly Newsletter

Subscribe to stay up-to-date on all the latest news