রাজধানীর বেইলি রোডে অভিযান চালিয়ে চারটি রেস্টুরেন্ট সিলগালা করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। একই সঙ্গে খিলগাঁওয়ে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। সেখানে একটি ভবন সিলগালা ও ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে নোটিস টানিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া মোহাম্মদপুর ও কামরাঙ্গীর চর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে রেস্টুরেন্ট ম্যানেজারসহ ৫৯ জনকে আটক করেছে। গত তিন দিনে এ পর্যন্ত ৫৬২টি অভিযান চালিয়ে ৫০৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। অভিযানে কর্মকর্তারা বলছেন, নকশা ব্যবহারের ব্যত্যয় ও নকশাবহির্ভূত ভবন শৃঙ্খলায় নিয়ে আসতে অভিযান অব্যাহত থাকবে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে বেইলি রোডে অভিযান চালায় রাজউক। এ অভিযানে নবাবী ভোজ, সুলতান’স ডাইন, পিজ্জা মাস্তান, রোস্টার ক্যাপ সিলগালা করে সংস্থাটি। সরেজমিনে দেখা যায়, দোতলা একটি ভবনের নিচতলায় নবাবী ভোজ রেস্তোরাঁটি অবস্থিত। ভবনটির ওপরের তলায় পোশাকের একটি ব্র্যান্ডের শোরুম রয়েছে। সুলতান’স ডাইনের বিষয়ে রাজউকের কর্মকর্তারা বলেন, রেস্তোরাঁটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। তবে তাঁরা দাবি করেছেন, তাঁদের সব কাগজপত্র আছে। তাই আপাতত রেস্তোরাঁটি সিলগালা করা হলেও কাগজপত্র দেখাতে পারলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ অভিযানে ভবনের অগ্নিসুরক্ষার ছাড়পত্র হালনাগাদ না করায় ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টারকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার ভবনটির পরিচালক সারফুদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের সবকিছু ঠিক আছে। শুধু ফায়ারের ছাড়পত্র এখনো পাইনি। একই সঙ্গে অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা না থাকায় সুইস বেকারিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।’ অভিযান পরিচালনাকারী রাজউকের অঞ্চল-৭-এর পরিচালক মনির হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘রাজউক নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। শুধু রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে না। যেখানেই সমস্যা বা কোনো ব্যত্যয় পাওয়া যাচ্ছে, সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ রাজধানীর অনিরাপদ ভবন নিয়ে রাজউকের ঘুম কবে ভাঙবে জানতে চাইলে মনির হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘রাজউক ঘুমিয়ে নেই। এর আগেও রাজউক নিয়মিত অভিযান চালিয়েছে। হয়তো সেটা গণমাধ্যমের চোখে পড়েনি।’ এ ছাড়া বেসমেন্টে রেস্টুরেন্ট, অপ্রশস্ত সিঁড়ি এবং পুরো ভবনে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা না থাকায় খিলগাঁওয়ের নাইটিঙ্গেল স্কাই ভিউ টাওয়ার সিলগালা করে দিয়েছেন ডিএসসিসির ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেন দক্ষিণ সিটির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর আলম। অভিযানে আদালত ৯১৯/১ হোল্ডিংস্থ নাইটিঙ্গেল স্কাই ভিউ টাওয়ারে গেলে সেখানে দ্বিতীয় তলার শর্মা কিং বাদে সাত তলা ভবনের বাকি সব রেস্টুরেন্ট বন্ধ দেখতে পান। এ সময় ভবনের বেসমেন্টসহ যত্রতত্র রেস্টুরেন্ট ও রেস্টুরেন্টের রান্নাঘর ঝুঁকিপূর্ণভাবে গড়ে তোলা, মাত্র ৩ ফুট প্রশস্ততার একটি সিঁড়ি থাকা এবং পুরো ভবনের অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা অপর্যাপ্ত হওয়ায় ভবনটি সিলগালা করে দেন। পরে সাড়ে ১২টার দিকে ওই এলাকার ‘কাচ্চি ভাই’ ও ‘সিরাজ চুঁইগোস্ত’ নামে দুটি রেস্তোরাঁয় যান ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু তালা দেওয়া ওই দুই খাবারের দোকানের গেটে ‘রেস্টুরেন্টের উন্নয়ন কাজের জন্য প্রতিষ্ঠানটি সাময়িক বন্ধ’ ব্যানার ঝুলছিল। তাই সেখানে অভিযান চালাতে পারেননি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
0 Comments
Your Comment