রাজনৈতিক মামলা ও কারাগারে থাকা নেতা-কর্মীদের মুক্তির জন্য আইনি লড়াইয়ের দিকে নজর এখন রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির। আপাতত হরতাল-অবরোধের মতো হার্ডলাইনের কর্মসূচির বিষয়ে ভাবা হচ্ছে না। সভা-সমাবেশ, পদযাত্রা, গণসংযোগের মতো কর্মসূচি দেওয়া হবে। দলটির শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ তথ্য জানান। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা আগে থেকেই বলে আসছিলাম- এটা একটা প্রিপ্ল্যান নির্বাচন। ৭ জানুয়ারি তারই হুবহু বাস্তবায়িত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন পুতুলের মতো কাজ করেছে। সেজন্য আমরা দেশের জনগণকে আহ্বান জানিয়েছিলাম- এই একতরফা ভোট বর্জনের জন্য। দেশবাসী আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভোট কেন্দ্রে যাননি। তাই আমরা দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সরকারের ওপর তীব্র চাপ সৃষ্টি হয় এমন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। অবিরাম সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাকশালী সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করা হবে।’ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএপি এখন স্বাভাবিক কর্মসূচি দিয়ে দলকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চায়। আটক নেতা-কর্মীদের মুক্ত করে মিছিল-সমাবেশের ধারায় ফিরে দলকে সংগঠিত করতে চায়। দলের তৃণমূলের কর্মীরা যাতে প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশে যোগ দিতে পারে সেদিকেই এখন তাদের নজর। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির দীর্ঘ বৈঠক হয়। বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে ভোটের দিনের পরিস্থিতি, দলের পরবর্তী করণীয় নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ভোট বর্জনের আহ্বানে দেশবাসী অভূতপূর্ব সাড়া দেওয়ায় খুশি দলটির হাইকমান্ড। ভোট কেন্দ্রে না গিয়ে সাধারণ মানুষের সরকারের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ হিসেবে দেখছেন তারা। দেশের বেশির ভাগ মানুষ বিএনপির নির্দলীয় সরকারের আন্দোলন সমর্থন করছে। এতে বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীরা অনেকটা চাঙা। বিএনপি মনে করছে, নির্বাচনে ভোটের হার ৮ থেকে ১০ শতাংশের বেশি হবে না। তাই দেশবাসীকে এবার নতুন সরকারকে বর্জনের আহ্বান জানাবে বিএনপি। এজন্য সভা-সমাবেশ, পদযাত্রা, গণসংযোগের মতো কর্মসূচি দেওয়া হবে। এ ছাড়া বিএনপির পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে ভোটের প্রকৃত তথ্যপ্রমাণ তুলে ধরবে। এদিকে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশে সংঘর্ষের পর থেকে তালাবদ্ধ নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় খোলা হয়েছে। খোলা হয়েছে গুলশানের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ও। পাঁচ মাস ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর গুলশানের বাসায় ফিরেছেন।
0 Comments
Your Comment