নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা না হলেও সরগরম হয়ে উঠতে শুরু করেছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা নিজেদের জনপ্রিয়তা তুলে ধরার চেষ্টা করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কাউকে দলীয়ভাবে প্রার্থী করবে না। ব্যাপক অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে উন্মুক্ত রাখবে ক্ষমতাসীন দল। ব্যক্তি জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে বিজয়ী হতে হবে আওয়ামী লীগের উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের ব্যাপক উৎসাহ দেখা গেলেও স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি। সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলাতেও ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত আছে মাঠের বিরোধী দল বিএনপির। কেন্দ্র ভোটে আগ্রহ না দেখালেও তৃণমূল নেতাদের কেউ কেউ দলীয় প্রতীকবিহীন ভোটে অংশ নিয়ে জনপ্রতিনিধি হতে চান। তাদের কেউ নীরবে, কেউ সরবে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার-প্রচারণা। জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দেখতে আগ্রহী ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকরা। এমনকি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট আসনের এমপিদের থেকে প্রভাবমুক্ত রাখতে দলীয়ভাবে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা জোরালো হবে বলে অভিমত আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের। স্থানীয় নির্বাচনের অন্যতম স্তর উপজেলা নির্বাচনে ভোটে আগ্রহীদের মধ্যে রয়েছেন- আওয়ামী লীগের দলীয় পদন্ডপদবি থাকার পরও সংসদ নির্বাচনে নৌকা না পাওয়া জনসংশ্লিষ্ট নেতারা। এবার ক্ষমতাসীন দল যেহেতু দলীয়ভাবে প্রার্থী দেবে না, সে কারণে জনপ্রিয়তা যাচাই করার এটা একটা সুযোগ মনে করছেন তারা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকার হাটবাজার, চা স্টল চষে বেড়াচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। নিজেদের যোগ্য ব্যক্তি মনে করে ভোট প্রার্থনা করছেন তারা। ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মো. মহিউদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রে দৌড়ানোর বিষয়টি আর নেই। সময় এখন জনগণের কাছে পরীক্ষা দেওয়া এবং আস্থা অর্জন করাই মুখ্য। সেই জায়গা থেকে আমি জনগণের কাছে গিয়েছি, যাচ্ছি এবং আমৃত্যু যাব। জনগণও আমাকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে গ্রহণ করবে বলে মনে হয়। বাকিটা নির্বাচনে বোঝা যাবে। রাজনৈতিক দলের বাইরেও সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এবার উপজেলা নির্বাচনে বেশ আগ্রহী হয়েছেন। দলীয় মনোনয়নের ব্যাপার নেই, অন্যদিকে কারও ওপর চাপও থাকবে না। সে কারণে এলাকায় পরিচ্ছন্ন ইমেজ আছে এমন ব্যক্তিরাও প্রার্থী হচ্ছেন। কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায় ভোট করতে চান সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত মোকারম সরদার। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষের সেবা করছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সহায়তাসামগ্রী প্রদানসহ নানা সামাজিক কাজে জড়িত। কাজেই নিকলীর সর্বস্তরের মানুষ আমাকে চান-এটাই বিশ্বাস করি। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দলীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে না। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন জমে উঠছে বলেই মনে হচ্ছে। আগেই নিশ্চিত করা হয়েছে কাউকে প্রতীক দেওয়া হবে না। সে কারণে এ নির্বাচনে প্রার্থীও বেশি হবে। প্রার্থী বেশি হলেও সংঘাত হবে না। কারণ নির্বাচন কমিশন শক্তহাতে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে। যেমন করেছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।
0 Comments
Your Comment