মোয়াজ্জেম হোসাইন রিমন ও তোফাজ্জল হোসাইন সুমন দুই ভাই। বাড়ি পেকুয়ার রাজাখালীর ছোট্ট গ্রাম দিলজানবাড়ী। দুজনই ৪৩তম বিসিএস ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। মোয়াজ্জেম হোসাইন শিক্ষা ক্যাডারে আর সুমন আহম্মেদ প্রশাসন ক্যাডারে। সাবেক জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা মোজাফ্ফর আহমদের দুই ছেলেই বিসিএস ক্যাডার হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করলেন। তাদের নিকটাত্মীয় কুলগাঁও সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক এ কে এম কায়েস উদ্দিন বলেন, ছোটকাল থেকেই দুই ভাই খুব মেধাবী। কঠিন পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের জোরে তারা সাফল্য অর্জন করেছে। একই ফর্মুলায় এর আগে বিসিএসে এসেছে আমার চাচাত ভাই খালেদও। তোফাজ্জল হোসাইন সুমন বলেন, মেধা, পরিশ্রম, চেষ্টা, হার না মানার মানসিকতা নিয়েই দুই ভাই বিসিএস জার্নিতে লেগেই ছিলাম। সফলতাও একসঙ্গে পেলাম। মায়ের ইচ্ছা ছিল আমরা দুজন ক্যাডার হব। এ জন্য মা অনেক হাড়ভাঙা পরিশ্রমও করেছেন। আর বাবা ছিলেন সব প্রতিকূলতার বটবৃক্ষ। শুধু সুমন-রিমন নয়, এই ছোট্ট গ্রাম থেকে এর আগে বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন আরও পাঁচজন। তারা হলেন- মাস্টার সালেহ আহমদের ছেলে রাসেলুল কাদের (২৮তম বিসিএস অ্যাডমিন) ও মেয়ে মাসুমা জান্নাত (৩৫তম বিসিএস অ্যাডমিন), নুরুল ইসলামের ছেলে মনসুর আলম কাদেরী (৩০তম বিসিএস পুলিশ), মাস্টার মফিজুর রহমানের মেয়ে মনোয়ারা আকতার রিফাত (৩৮তম বিসিএস পুলিশ) ও ব্যবসায়ী ছাবের আহমদের ছেলে মো. খালেদ হোসাইন (৪০তম বিসিএস শিক্ষা)। এদের মধ্যে রাসেল অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে উপসচিব, মনসুর অ্যাডিশনাল এসপি, মাসুমা ইউএনও, রিফাত এএসপি ও খালেদ শিক্ষক। অন্যদিকে মাস্টার সালেহ আহমদের ছোট ছেলে আসিফুল কাদেরও বাংলাদেশ ব্যাংকের জয়েন্ট ডিরেক্টর। সবার একটাই কথা রাসেল-মনসুরের অনুপ্রেরণায় তারা বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন। এই গ্রামের ছেলে-মেয়েদের বারবার বিসিএস হওয়ার বিষয়টি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। দিলজানবাড়ীর মেয়েদের ছেলে-মেয়েরাও বিসিএসের সাফল্য পেতে শুরু করেছে। মরহুম ফররুখ আহমেদের নাতি আওলাদুল হাসান মিনার ৪০তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন, ব্যবসায়ী ছাবের আহমেদের নাতনি তানিয়া তাসকিন ৪১তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত। এ বাড়ির আরেক নাতি আবু শিহাব মোহাম্মদ ইমতিয়াজ ৪৩তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারের সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। আরেক নাতি জুনায়েদ সিনিয়র সহকারী জজ, আবদুর রহমান মোহাম্মদ তামিম, সাব রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত। জানা গেছে, ছোট-বড় ২৩ পরিবার নিয়ে দিলজানবাড়ী গ্রাম। এসব পরিবারে রয়েছেন ১৮ জন শিক্ষক। এসব পরিবারের আত্মীয়স্বজনসহ বর্তমানে ১৮ জন বিসিএস ক্যাডার।
0 Comments
Your Comment